সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ০৫:১৯ অপরাহ্ন
সামাদ খান, ফরিদপুর প্রতিনিধি:: ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার ১টি পৌরসভাসহ ১১টি ইউনিয়নে ১৫৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শহীদ মিনার নাই ১১১টিতে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিশেষ দিবসে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়। শুধু পুঁথিগত বিদ্যার বাহিরে ফেব্রুয়ারি মাসের মহান ভাষা আন্দোলনের ঐতিহাসিক গুরুত্ব ও তাৎপর্য সম্পর্কে তেমন কিছু জানতে পারছে না কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোতে শহীদ মিনার স্থাপনের জোর দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভিবকেরা।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানান, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসসহ বিভিন্ন জাতীয় দিবসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে বিরম্বনায় পরতে হয় তাদের। সংশ্লিষ্টরা বলছেন ইচ্ছা থাকলেও আর্থিক বরাদ্ধ ও জায়গা না থাকায় শহীদ মিনার নির্মান সম্ভব হয়নি। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্র মতে, ৯৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ৭৫টিতে নেই শহীদ মিনার।
অপরদিকে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্র মতে, উপজেলায় ৮টি জেনারেল ও কারিগরি কলেজ, ১২টি মাদ্রাসা, ৪২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ মোট ৬২টি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে শহীদ মিনার নেই ৩৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও ম্যানিজিং কমিটির সদস্য সহ সংশ্লিষ্ট সদস্যদের উদাশীনতার কারনে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মান হয়নি বলে মনে করছেন সুধীজনরা।
অন্যদিকে যেসব প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার আছে সেগুলোও বছরের পর বছর পরে থাকে অযত্ন অবহেলায়।
এ বিষয়ে উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার রাশেদুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়গুলোতে শহীদ মিনার নির্মাণের বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নির্দেশনা দিয়েছিল। আমরা বরাদ্ধ ও নকশা তৈরি করে পাঠিয়েছি। স্থানীয় ভাবে কিছু প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ সিরাজুল ইসলাম জানান, যে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই সেগুলোর একটি প্রকল্পের মাধ্যমে নকশা ও ডিজাইন করা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু করোনার কারনে সেটি স্থগিত হয়ে গিয়েছে। দ্রুতই যে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নাই সেগুলো নির্মাণ হবে। বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ব্যাসদী রাশিদা নবী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যাসদী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি জাহেদুন নবী মনি বলেন, দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পাশাপাশি অবস্থানে আছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৭২ সালে আমার পিতা মরহুম মাহমুদুন নবী প্রতিষ্ঠা করেন। সর্বশেষ প্রাথমিক বিদ্যালয়টি জাতীয় করণ হয়েছে। ২০০৩ সালে রাশিদা নবী উচ্চ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করি। ২০২২সালে উচ্চ বিদ্যালয়টি এমপিও করণ হয়েছে। বিভিন্ন সিমাদ্ধতার কারনে শহীদ মিনার নির্মাণ করতে পারি নাই তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে অস্থায়ী শহীদ মিনার করে জাতীয় দিবস গুলি পারন করা হয়। সরকারী পর্যায়ে হোক আর ব্যক্তি উদ্যোগে হোক অচিরেই দৃষ্টি নন্দন দুটি প্রতিষ্ঠানের সুবিধা মত জায়গায় শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে।
উপজেলা সদরে অবস্থিত মধুখালী মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরেজমিনে প্রধান শিক্ষক অলকা বিশ্বাসের সাথে কথা হলে তিনি জানান, মধুখালী মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নাই তার প্রধান কারন হলো বিদ্যালয়টি এমন জায়গায় অবস্থান যে কারনে শহীদ মিনার নির্মাণ করা সম্ভব না। জায়গার স্বল্পতা রয়েছে। মধুখালী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাশে অবস্থান। জাতীয় সকল আনুষ্ঠানিকতা কেন্দীয় শহীদ মিনারেই করা হয়। সুযোগ সুবিধা হলে বিদ্যালয় প্রঙ্গনে একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে।